এবার ২০২২-২৩ মৌসুমের ক্লাব ফুটবল শেষে শুরু হয়েছে ফিফা উইন্ডো। তাই জাতীয় দলগুলোও এখন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলায় ব্যস্ত। আর এ সময়েই ভিনিসিয়াস জুনিয়রের প্রতি সমর্থনে বর্ণবাদবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে দুইটি আফ্রিকান দেশের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল, যার একটি অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার (১৭ জুন) দিবাগত রাত দেড়টায়। এদিকে, ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে ছিটকে পড়া সেলেসাওরা পরবর্তীতে প্রীতি ম্যাচে মরোক্কোর কাছেও হারে।
ফলে হতাশার স্মৃতি সঙ্গে নিয়েই কাল আফ্রিকান দেশ গিনির বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচে মাঠে নামে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। আর ম্যাচে আফ্রিকান দেশটিকে উড়িয়ে দিয়ে বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে সেলেসাওরা। বর্ণবাদবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে এ প্রীতি ম্যাচে কাল স্পেনের বার্সেলোনায়, লা লিগার ক্লাব এসপানিওলের আরসিডিই স্টেডিয়ামে মাঠে নামে দুই দল।
এর আগে কখনো মুখোমুখি না হওয়ায় দুই দলের জন্যই এটি ছিল নতুন অভিজ্ঞতায়। আর এ অভিজ্ঞতায় পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় দেশ গিনিকে তিক্ততাই উপহার দিয়েছে ব্রাজিল। রীতিমত গোল উৎসবে মেতেছিল তাদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে শুরু হওয়া এ ম্যাচে কাল দলের প্রাণভোমরা নেইমার জুনিয়রকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিল সেলেসাওরা।
তবে দলে ছিলেন ভিনিসিয়াস সহ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা আরও ১৪ জন। ম্যাচের শুরুতেই গিনির ফুটবলার ন্যাভি কেইতার ফাউলের শিকার হলে ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। তবে নিজেদের অর্ধে পাওয়া সে ফ্রি কিক থেকে তেমন কোনো সুবিধা আদায় করতে পারেনি লাতিন আমেরিকার দেশটি। এরপর ষষ্ঠ মিনিটে প্রথমা আক্রমণে যায় ব্রাজিল। কিন্তু লুকাস পাকেতার করা এসিস্টে আর্টন লুকাসের বা পায়ের নেয়া জোরালো শট ফিরিয়ে দেন গিনির গোলরক্ষক।
এরপর ম্যাচের ২৭ মিনিটেই আরও দুইবার গোল করার সুযোগ পায় ব্রাজিল। রিচার্লিসননের করা হেডে বল চলে যায় গোলপোস্টের একেবারে কাছে দিয়ে। তখন ক্যাসেমিরের নেয়া শটও আবার ফিরিয়ে দেন গিনির গোলরক্ষক। তবে সেলেসাওরা প্রথম গোলের দেখা পান সেই ২৭ মিনিটেই। ক্যাসেমিরোর শট ফিরিয়ে দিলেও তা হাতে রাখতে পারেননি প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক। তখন জোয়েলিনটনের নেয়া শটে বল খুঁজে পায় জালের ঠিকানা।
এক গলের লিড নিয়ে দ্বিগুন আক্রমণে নামে সেলেসাওরা। আর সফলতাও পায় তিন মিনিট পরই। ত্রিশ মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা রদ্রিগো গুজের নেয়া ডান পায়ের শটে দ্বিতীয়বার লক্ষ্যভেদ করে ব্রাজিল। দুই গোল হজম করে গিনিও অবশ্য সময় নেয়নি একটি ফেরত দিতে। ৩৬ মিনিটে গোলের দেখা পায় তারাও। সারহু গিরাসির হেডে লক্ষ্যভেদ করে তারা।
এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতির পর আবারও গলের দেখা পায় ব্রাজিল। ৪৭ মিনিটে এডার মিলিতাওয়ের হেডে তৃতীয়বার লক্ষ্যভেদ করে তারা। এরপর পুরো ম্যাচেই আরও বেশ কয়েকবার গোল করার সুযোগ পেলেও গলের দেখা পেতে ব্যর্থ হয় তারা। শেষদিকে গিনির ফুটবলারের বাজে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। আর ৮৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে নেন ভিনিসিয়াস। শেষ পর্যন্ত আর গোল না হওয়ায় ৪-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে ব্রাজিল।
এদিকে হেরে গেলেও পুরো ম্যাচ জুড়েই লড়াইয়ের চেষ্টা করেছে গিনি। ৪২ শতাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল তারা। পুরো ম্যাচে গোল করার জন্য ১২ টি শট নিয়ে ৮ টিই লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল তারা। বিপরীতে গিনি ৭ টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পেরেছিল ৫ টি। ম্যাচে জয় পরাজয় থাকলেও এর মাধ্যমে মূলত বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল দুই দলের ফুটবলাররা। আর বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য কালো জার্সি পরে মাঠে নামে ব্রাজিল।